আমায় একটা পুতুল এনে দিয়েছিল দাদাই।
টকটকে লাল বেনারসি জড়ানো
রক্ত-মাংসের জীবন্ত এক পুতুল, আমার 'দোলাবৌদি'!
সেদিনের অত আয়োজন,
অত আলোর ঝিলিক, চারিদিকের সুখ সুখ গুঞ্জন,
সবকিছু ছাপিয়ে-
আমি সম্মোহিতের মতো ছুঁয়ে দিতে গেলাম,
দোলাবৌদির পাপড়িতে লেগে থাকা একবিন্দু ঝলমলে আঁখিশিশির।
মানুষের কান্নাও বুঝি অত সুন্দর হয়!
তারপর
একসাথে কত রান্নাবাটি খেলা,
ঘরময় আমাদের দু'জোড়া নূপুরের রিনিঝিনি,
খুনসুটি, আবদার, দোলাবৌদির উথালপাথাল স্নেহ....
মাঝেমাঝে বড় অবাক লাগতো-
ভেতরে,বাহিরে,
মানুষ বুঝি অমন সুন্দরও হয়; দোলাবৌদির মতো!
মা মা গন্ধটা কেন পাই দোলাবৌদির গায়েও?
শাড়ি বড় ভালোবাসতো দোলাবৌদি,
আলমারিভর্তি কত রঙের শাড়ি!
গোলাপি, মেরুন, নীল, সর্ষেহলুদ,
অথচ অত অত রঙের ভীড়ে
একদিন
শেষ বিকেলের আলোয়,
দোলাবৌদির ধবধবে সাদা আঁচলে উড়তে দেখলাম মৃত্যু।
সেদিনও দোলাবৌদির চোখে থৈ থৈ বন্যা,
আমি আরেকবার সম্মোহিত হয়ে গেলাম,
ছুঁয়ে ফেললাম ভিন্ন কান্নার জল; জলের দাবানল ।
বছর আটেক পর-
আমি আজও ধড়ফড় করে জেগে উঠি মাঝরাতে,
আঙুলডগায় স্পষ্ট ভেসে উঠে পুরোনো কান্নার দাগ।
আমার স্মৃতিতে
খালি পায় হেঁটে যায় দোলাবৌদি,
ছাদের কার্ণিশে উড়তে থাকে সফেদ আঁচল.....
আমার দোলাবৌদি সেদিন পাখি হয়েছিল!