তুমি চলে যাবার পর - হদয় বাঙ্গালী

তুমি চলে যাবার পর - হদয় বাঙ্গালী


তুমি চলে যাবার পরও বেঁচে রয় নিষ্প্রাণ রোদনে-এ জীবন,
ছাঁয়া দিয়ে আগলে রাখা বৃক্ষটির মূল ছিড়ে যাওয়ার পর বৃক্ষটি যেমন করে বাঁচে
দু'ফোটা করুণার জলের বিশ্বাসে, ঠিক তেমন করে।
স্বপ্ন নামক ফুলগুলো ছটফট করে করে ঝরে্ গেলো -বড্ড অবেলায়,
পাখিদের কলতান শুনতে পেলো না-বৃক্ষের ডালগুলো-বড় নির্জিব নিষ্প্রাণ অসহায়।
নেই তুমি যে আকাশের বুকে,বৃক্ষের ভেজা পাতার নির্যাসে-সেই তোমার খবর তুমি চলে যাওয়ার পর-
এ খবর পৌঁছে গেছে ঐ দু:খদের কানে
দূরের নক্ষত্রে বসে তারাও শুনেছে
বেদনার আর্তনাদ-পথশিশুদেরও কাঁদায়
যখনি আমি কষ্টদের পানে চেয়ে চেয়ে
চাপা স্বরে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসা'ই-ওরাও সবে তখন
ছুঁটে আসে,
যে ঘরে তোমার স্মৃতিগুলো পড়ে রয়
সে ঘরের সদর দরজায় -এসে ওরা দাঁড়ায়,
বেদনার আর্তনাদ শুনতে পেয়ে
ওরা দরজার ওপাশ থেকে চিৎকার করে করে ডাকতে থাকে,
আমি নিরবে কিছুকাল -তাদের চিৎকার দরজার এপাশ থেকে কান পেতে শুনি,
তাদের চিৎকার ক্রমে ক্রমে আরো -ভারী হয়
বাতাসের সাথে মিশে যায় -এ ভেজা নগরীর বুকে
একসময় সবাই বিরক্ত হয়,
সদর দরজায় বারে বারে কড়া নেড়ে -ওরাও চলে যায়;
আমি তখন দেয়ালের পাশ ঘেষে মেঝেতে শুয়ে রই,
ওদের চলে যাওয়ার শব্দ -আমার কানে বারে বারে বাজতে থাকে,
তারপর,তোমার রেখে যাওয়া দু:খ পোষা ছাঁনাদুটো বুকে জড়িয়ে ধরে-
উপচে পড়ে থাকি-মেঝের কোলে,
দুঃখ পোষা ছাঁনাগুলো তৃষ্ণায় মা- মা বলে কাঁদে,
আমি তাদের মুখে অশ্রুজল ঢেলে দিয়ে
তৃষ্ণা মেটানোর ব্যর্থ প্রয়াস চালাই,
এক সময় ওদের মুখে তুলে দেবার মতো ফোটা জলটুকুও থাকেনা।
মূলছেড়া বৃক্ষে কত ফোটা জল থাকে 'আর'
এভাবে প্রতিরাত প্রতিদিন কেটে যায়-আমার।
তুমি নেই এ খবর এখন -মুখে মুখে -সব দুঃখরা'র।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post